শিবগঞ্জে প্রতিবন্ধী নারীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ অতঃপর অন্তঃসত্তা

শিবগঞ্জে প্রতিবন্ধী নারীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ অতঃপর অন্তঃসত্তা

শেখর চন্দ্র সরকার শিবগঞ্জ বগুড়া প্রতিনিধিঃ

বগুড়ার শিবগঞ্জের এক বিধবা প্রতিবন্ধী (২৫) নারীকে এক বখাটে লাগাতার ধর্ষণ করার ফলে ওই প্রতিবন্ধী নারী এখন সাত মাসের অন্তস্বত্বা। আমরা যাদের গ্রামের অভিভাবক ভাবি সেইরকমই ইউপি সদস্য বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে । থানায় অভিযোগ দেওয়ার কারনে ধর্ষীতার বাবা-মাকে লাগাতার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন ওই ধর্ষকসহ এলাকার প্রভাবশালী ইউপি সদস্য!
এই হুমকি-ধামকির ভয়ে ধর্ষিতার পরিবার ভয়ে উৎকন্ঠা'য় জীবন-জীবিকা পার করছেন ধর্ষীতা ও তার বাবা-মা। থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষক কে সদর থানার মাটিডালি এলাকা থেকে আটক করেছে।

জানা গেছে, উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের গনকপাড়া গ্রামের মোঃ বাকি উল্লার ছেলে আফজাল হোসেনের সাথে সাত বছর পূর্বে ওই প্রতিবন্ধী নারীর বিবাহ হয়। বিয়ের সাড়ে ৫ বছরের মধ্যে তাদের দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম  নেয়। সুখে শান্তিতে ঘর সংসার করলেও গত ডের বছর পূর্বে হঠাৎ করেই মারা যায় ওই প্রতিবন্ধীর স্বামী আফজাল হোসেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর হতেই  ওই প্রতিবন্ধী নারী দু’সন্তানকে নিয়ে স্বামীর ঘরেই অবস্থান করছিলো। মানুষের কাছ থেকে চেয়ে চিন্তে, ভিক্ষা করে সন্তানদের নিয়ে কষ্ট করে দিন পাত করছিলো ওই প্রতিবন্ধী । হঠাৎ তার উপর কুনজর পড়ে এলাকার ঘর জামাই বাদল মিয়ার। এর আগেও বাদল একাধিক বিয়ে করেছে । বাদল গাইবান্ধা জেলার গবিন্দগঞ্জ উপজেলার বাসাপাড়া গ্রামের রহিম উদ্দিনের ছেলে। বাদলের বর্তমান স্ত্রী বগুড়া শহরে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ঝি-এর কাজ করে। স্ত্রী বাড়িতে না থাকায় একাই থাকতো বাদল। মাঝে মধ্যে সে বিধবা প্রতিবন্ধী নারী বাড়িতে যাতায়াত করতো। লম্পট বাদলের কুনজর থেকে রক্ষা পেলোনা বিধবা প্রতিবন্ধী নারী। সে ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রায় ধর্ষণ করতো প্রতিবন্ধী ওই নারীকে । লাগাতার ধর্ষণের ফলে প্রতিবন্ধী নারী অন্তস্বত্বা হয়ে পড়লে ভয় পেয়ে যায় লম্পট বাদল। ভয়ে আশ্রয় নেয় গনকপাড়া গ্রামের মোঃ বিষা মিয়ার ছেলে এলাকার প্রভাশালী ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলামের কাছে। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ইউপি সদস্য জাহিদুল ওই প্রতিবন্ধী কে ভয়-ভীতি দেখিয়ে এলাকার কেও জানার আগেই বাদলের বাড়িতে রেখে দেয়। তাদের ধারনা ছিলো এক সময় বাচ্চাটা নষ্ট করে ফেলবে। বাদলের বাড়িতে রোখছানাকে রেখে দেওয়ার ফলে ও বাদলের স্ত্রী না থাকার কারনে আবারো বাদল প্রতিনিয়তই ধর্ষণ করতো তাকে। আজ কাল করে প্রতিবন্ধীর  পেটের বাচ্চাটা নষ্ট করতে পারেনি বাদল।  প্রতিবন্ধী নারীর গর্ভের সময় বাড়তে থাকলে তার চেহারায় পরিবর্তন আসার ফলে সন্দেহ হয় এলাকার সাধারণ মানুষের। কৌতুহলি নিকট জনেরা তাকে ডাক্তারী পরিক্ষা করালে বিষয়টি জানাজানি হয়। ডাক্তারী পরিক্ষায় জানা যায় বিধবা প্রতিবন্ধী নারী সাত মাসের অন্তস্বত্বা। অবস্থা বেগতিক হলে ধর্ষক বাদল আবার আশ্রয় নেয় এলাকার প্রভাশালী ইউপি সদস্য জাহিদুলে কাছে। জাহিদুল ধর্ষককে এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও এলাকার সাধারণ মানুষের তোপের মুখে লোক দেখানো গ্রাম্য শালিসের  আয়োজন করে প্রভাশালী ইউপি সদস্য জাহিদুল। ওই শালিসে জাহিদুলের পুর্বে শিখিয়ে দেওয়া বুদ্ধিতে ধর্ষক বাদল টয়লেটের যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে যায়। গত সাত মাস যাবত  এলাকার ওই প্রভাশালী ইউপি সদস্য জাহিদুল বিষয়টি জানলেও শুধুমাত্র টাকার কাছে বিক্রি হয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আইনগত কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এখনো এলাকার সাধারণ মানুষকে নানা ভাবে বিভ্রান্ত করছেন তিনি।

এ বিষয়ে প্রতিবন্ধী’র মা নূর জাহান বেগম বলেন, আমি থানায় একটা অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি অভিযোগ দেওয়া পর হতেই ইউপি সদস্য জাহিদুলসহ অজ্ঞাত কিছু লোকজন আমাকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমি ভয়ে বাড়ির বাইরে যাইনা।

এ বিষয়ে প্রতিবন্ধী নারী ধর্ষনের শিকার  বলেন, বাদল আমাকে ভয়-ভীতি দেখিয়েছে, আমি কাউকে কিছু বল্লে সে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে।

বিষটি নিয়ে প্রভাশালী ইউপি সদস্য জাহিদুল বলেন, প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ করেছে এটা সত্যি। সে বর্তমানে সাত মাসের অন্তস্বত্বা। আমি একটা বিচারের ব্যবস্থা করেছিলাম কিন্তু বিচারের দিন বাদল পালিয়ে গেছে। আইনের আশ্রয় নেওয়ার প্রসঙ্গ আসলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ এসএম বদিউজ্জামান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর, ধর্ষককে আটক করা হয়েছে।

Post a Comment

[blogger]

MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget