শার্শার ডিহি ইউনিয়নে অবাধে চলছে জমজমাট জুয়ার আসর

সোনারগাঁও টিভি,


নিজস্ব প্রতিবেদকঃ যশোরের শার্শার ডিহি ইউনিয়নের কয়েকটি স্পটে অবাধে চলছে জমজমাট তিন কার্ড জুয়ার আসর। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা একটি মহল ও এক জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে অনৈতিকতার তিন কার্ডের জুয়া বোর্ড পরিচালনা করছে এলাকার তিনটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এখানে শার্শা উপজেলা ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার জুয়াড়ীরা খেলায় দিন-রাত বুদ হওয়ায় প্রতিদিন হাত বদল হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। জুয়ার আসরে খেলার পাশাপাশি আশেপাশের বিভিন্ন স্পটে চলছে নেশার রমরমা কারবার। গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্প থেকে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে দীর্ঘ দিন থেকে দিন-রাত রমরমা জুয়া ও মাদকের আসর চললেও এটা বন্ধে কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যায় না। তবে অভিযোগ রয়েছে, উপরিমহলকে ম্যানেজ করেই চলছে এ অনৈতিক কর্মকান্ড। 



স্থানীয় সূত্র জানায়, বিগত কয়েক বছর ধরে ডিহি ইউনিয়নের দুর্গাপুর মাঠের পরিত্যক্ত বাড়ী ও গোকর্নের মাঠের শিশু বাগান,শাড়াতলা মাছ  বাজারের দোতলায় ও রাজনগর মাঠের মেহগনি বাগানে,অবদাহ বাজারে তিন তাস নামে চলে আসছে অবাধ জুয়া আসর। এলাকার উঠতি যুবক, আলোচিত জুয়াড়িরা এখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। দুর-দূরান্ত থেকে আসা জুয়াড়ীরা এখানে লক্ষ লক্ষ টাকার হাত বদল করছে এবং প্রতিদিন এ চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেকেই টাকা খুইয়ে হচ্ছেন নিঃস্ব। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা একটি সংঘবদ্ধ চক্র সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চালাচ্ছে নিষিদ্ধ জুয়ার আসর। এ জুয়াকে কেন্দ্র করে স্পটে নেশা গ্রহণ সমান তালে চলায় জুয়া ও মাদকের মোহে পড়ে অনেকে বসছেন পথে। 

চলমান জুয়া ও মাদকের আসর নিয়ে এ অঞ্চলের অভিভাবক ও তাদের পরিবার উদ্ধিগ্ন হয়ে পড়েছেন। 



ডিহি ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের আব্দুর রহিম খালাসির ছেলে মহিনুর রহমান, অবদাহ গ্রামের  বাবুল, লক্ষণপুর ইউনিয়নের কেষ্টপুর গ্রামের জুয়াড়ী আলী ও ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক পিন্টুর  ইন্ধনে মৃত আমানত আলীর ছেলে চান্দু মিয়া  এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 


দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভিআইপি জুয়াড়ীরা তিন তাস জুয়ার বোর্ডে মোটা অংকের টাকা হাত বদল করছে। সেই সাথে মাদক সেবন করে নেশায় বুদ হচ্ছে। এখানেও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা ও অন্য ধারার একটি সংঘবদ্ধ চক্র দিন-রাত সমান তালে নিষিদ্ধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। 



ওই তিনটি জুয়াড়ী চক্র স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা ও এক জনপ্রতিনিধি পুলিশ প্রশাসনের সাথে সখ্যতা রেখে চলেছেন বলে অভিযোগ আছে। যার কারণে ওই চক্রটি অনেকটা বেপরোয়া হয়েই এ অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের মহামারির মধ্যেও কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে স্পট গুলোকে ঘিরে বসছে ছোট-খাটো বাজার, বিতর্কিত পরিচিত মুখ আর অপরিচিত অনেক লোকজনের আনাগোনা দেখা যায় সেখানে। মোটর সাইকেল, ইজিবাইক সহ বিভিন্ন বাহনে চেপে আসে তারা। নেশায় বুদ হয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে এই আসরে। কয়েকটি মহলকে ম্যানেজ করে অসাধু চক্রটি দীর্ঘদিন জুয়ার কারবার চালিয়ে যাওয়ায় এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ী ও উঠতি বয়সের যুবকদের মধ্যে নানা প্রতিকুল প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কেউ খোয়াচ্ছে, কেউ সামান্য লাভবান হচ্ছে। নেশায় বুদ থাকায় খোয়ানো পার্টি আঁচ করতে পারছে না। তবে বেশির ভাগ জুয়া খেলতে এসে নিঃস্ব হয়ে বাড়ি ফিরছে। বিভিন্ন সময়ে জুয়া আসর চালানোর কারণে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে এমন তথ্যও মিলছে। 


এলাকা থেকে অভিযোগ উঠেছে জুয়া আসরকে ঘিরে বিভিন্ন মাদকের সহজ প্রাপ্যতা হওয়ায় দিন দিন এলাকার উঠতি যুবক ও ছাত্র সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। কোন অবস্থাতেই তাদের সন্তানদের এই মরন নেশার থেকে দূরে রাখতে পারছে না, অনেক সময় অধিকাংশ পরিবার গুলোতে বিরাজ করছে অশান্তি। পরিবার থেকে অর্থ না পাওয়ায় জুয়া বোর্ডের দিকে ঝুঁকছে আর জুয়াড়ীদের নির্বিঘ্নে খেলায় সহযোগীতা করতে বোর্ড পরিচালনা কারী চক্র এদেরকে ব্যবহার করছে। বিভিন্ন খাবার, মাদক সরবরাহ, জুয়াড়ীদের নির্দিষ্ট আসরে পৌঁচ্ছে দেওয়া, মোটর সাইকেল হেফাজতে রাখাসহ মোড়ের চায়ের দোকন গুলোতে পাহারাদার হিসাবে দিন-রাত বসিয়ে রাখা হচ্ছে। যুবকদের দিন শেষে হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিচ্ছে। আর এই টাকা দিয়েই অনেকে নেশা করছে। মাঝে মাঝে এলাকায় কিছু ছোট-বড় চুরির ঘটনাও ঘটছে বর্তমানে জুয়া আসরের সাথে মাদকের ভয়াবহতাও বৃদ্ধি পাওয়ায়। জুয়া ও মাদকের আসরকে ঘিরে এলাকার অভিভাবক তাদের সন্তান ও পরিবেশ নিয়ে বেশ চিন্তিত। সব কিছু জানা স্বত্বেও অহেতুক বিপদে পড়ার ঝামেলা এড়াতে নিরবতা পালন করে চলেছে তারা।


এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জুয়া সম্রাট বাবুল জানান,আগে খেলা চালাতাম। তিনদিন হলো সেটা বন্ধ করে দিয়েছি।

Post a Comment

[blogger]

MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget