প্রকৃতিতে রঙের আগুনে জ্বলছে কৃষ্ণচুড়া

সোনারগাঁও টিভি,


ইকরামুল ইসলাম বেনাপোল  প্রতিনিধি : ঋতুচক্রের আবর্তনে কৃষ্ণচূড়া তার মোহনীয় সৌন্দর্য্য নিয়ে আবারো হাজির হয়েছে প্রকৃতিতে। চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য্য যেন হার মানায় ঋতুরাজকেও। তাইতো কৃষ্ণচূড়া গ্রীষ্মকে দিয়েছে অন্য এক সৌন্দর্য। 



সারা দেশের মতো যশোরের শার্শায় প্রকৃতিতে এখন কৃষ্ণচূড়ার বর্ণিল হাওয়া দোলা দিচ্ছে। সুবাতাস ছুঁয়ে যাচ্ছে ফুল ও প্রকৃতিপ্রেমি মানুষের হৃদয়। পাখির ডানায়, হাওয়ায়-হাওয়ায় উড়ছে তার লাবণ্য। 


এ যেন গ্রীষ্মের কাঠফাঁটা রোদ্দুরকে সহনীয় করতে কৃষ্ণচূড়ার বর্ণিল রূপে সেজে উঠেছে প্রকৃতি। দেখলেই মনে হয় কৃষ্ণচূড়ার রঙের আগুন জ্বলছে শাখায় শাখায়।


গাছে গাছে রক্তিম আভা নিয়ে জেগে থাকা কৃষ্ণচূড়া দৃষ্টি কাড়ছে সেইসব ফুলপ্রেমি মানুষদের, যারা শত ব্যস্ততার মধ্যেও ফুলের জন্য অপেক্ষা করেন। আর কৃষ্ণচূড়ার জন্য প্রহর সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রহর গোনেন।


এখানকার বেশ কয়েকজন ফুল ও প্রকৃতিপ্রেমি মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যারা ফুলপ্রেমি মানুষ, তাদের কাছে কৃষ্ণচূড়া একটি জনপ্রিয় ফুল। 


নানা বৈশিষ্ট্যে দৃষ্টিনন্দন এ ফুলের কদর রয়েছে সব মহলেই। বিশেষ করে বাংলা কাব্য, সাহিত্য, সংগীত ও বিভিন্ন উপমায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের কথা ব্যাপকভাবে উঠে এসেছে। 


ফুলটির রং এত তীব্র যে অনেক দূর থেকেই চোখে পড়ে। হঠাৎ দূর থেকে দেখলে মনে হবে, কৃষ্ণচুড়া গাছে যেন রঙের আগুন লেগেছে।


 সরেজমিনে দেখা গেছে, এই প্রতিটি গ্রামে কিংবা শহর এলাকার কোথাও না কোথাও দেখা মিলছে কৃষ্ণচূড়ার।  এলাকার বেশ কিছু পাড়া-মহল্লায়ও ফুলটি সগর্বে জেগে রয়েছে।


সাধারণত বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এ দু‌ই মাস নিয়েই গ্রীষ্মকাল। আর গ্রীষ্মের ফুলের কথা বলতেই সবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে কৃষ্ণচূড়ার কথা। সুমিষ্ট রসাল ফলের জন্য গ্রীষ্মকাল এগিয়ে রয়েছে, তবে ফুলের দিক থেকেও অন্যসব ঋতুর তুলনায় এগিয়ে রয়েছে  গ্রীষ্মকাল। 


তাই ফুল উৎসবের ঋতু বলা যায় গ্রীষ্মকালকেই। এ মৌসুমে কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙের যে উম্মাদনা, তা এতই আবেদনময়ী যে চোখ ফেরানো অসম্ভব। 


 গ্রীষ্মের শুরু থেকেই কৃষ্ণচূড়া ফুলটি প্রকৃতিতে নেমে আসতে শুরু করে। দূর থেকে কৃষ্ণচূড়া দেখলে শুধু মানুষের নয়, পাখিদেরও যেন মন ভরে ওঠে। 


তাই নানা জাতের পাখির আনাগোনাও থাকে গাছটিকে ঘিরে। বিশেষ করে জাতীয় পাখি দোয়েল, টুনটুনি, চড়ুই, বুলবুল পাখির সরব উপস্থিতি থাকে সারা বেলা। শরীরে রক্তিম আভা মেখে কৃষ্ণচূড়া যেন সারাক্ষণ সবুজ বনভূমি, তৃণভূমিকে আলোকিত করে রেখেছে।


 রঙে, রূপে, উজ্জ্বলতা ও কমনীয়তায় কোনো  কিছুই যেন কৃষ্ণচূড়ার সমকক্ষ নয়। কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে একবারের জন্য হলেও দৃষ্টি আটকে যায় না কিংবা থমকে দাঁড়ায় না- 


কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম "ডেলোনিখ রেজিয়া"। এটি ফাবাসিয়ি পরিবারের অন্তর্গত একটি বৃক্ষ যার গুলমোহর নামেও পরিচিতি রয়েছে। 


বসন্তের শেষ দিকে সাধারণত কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে পড়তে শুরু করে। ধীরে ধীরে পত্রহীন বাকানো ডালগুলোতে দেখা যায় কলির আভাস।  


অন্যান্য ফুল গাছে যখন নতুন পাতা আসে কিন্তু ফুল আসে না, ঠিক তখনই কৃষ্ণচূড়ার সব পাতা ঝরে গিয়ে ফুলের কলি দেখা দেয়। আর গ্রীষ্মের শুরুতেই দেখা যায় লালের আভাস। তারপর লালে লালে উজ্জ্বল হয়ে প্রতৃতিতে যেন আগুন লাগিয়ে দেয় কৃষ্ণচুড়া।


ফুল প্রেমিরা জানান, যখন কৃষ্ণচূড়া ফৌটে তখন গাছে গাছে লাল-সবুজ রঙে যেন ভরে উঠে। আর এ সময়টা খুবই ভালো লাগে। সেটা এক  অন্যরকম ভালবাসা।

Post a Comment

[blogger]

MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget